Bituminous and Subbase

যে কোন রকমের রাস্তা নির্মাণ করতে হলে প্রতিটি রাস্তার জন্য প্রথমত বাঁধ  নির্মাণ করে রাস্তার ভিত্তি বা সাব গ্রেড তৈরি করতে হয় । পরবর্তীতে সাববেস তৈরি করে বিটুমিনাস বা অন্যরকমের রাস্তা বিভিন্ন ধাপে পর্যায়ক্রমে তৈরি করতে হয় ।

 সাব গ্রেড প্রস্তুতকরণ : রাস্তার স্ট্রাকচার পর্যায়ক্রমে অনেক ধরনের আবরণের  সমষ্টিতে নির্মিত হয়ে থাকে । সাব গ্রেড হচ্ছে যে কোন রাস্তা বা পেভমেন্টের জন্য সর্বনি¤œস্তর । সাব গ্রেডকে রাস্তার ভিত্তি  বলা যেতে পারে । সাব গ্রেডই শেষ পর্যন্ত রাস্তার উপরের সমস্ত ভার বহন করে । এটি মাটির কাজের উপরের অংশ বা আবরণ । তবে এটি মাটি ভরাট বা কাটা  উভয় ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য । সাবগ্রেড যত মজবুত ও শক্তিশালী হয় রাস্তাও তত টিকসই হয় । সাবগ্রেডের ভারবহন ক্ষমতার উপর অনেক সময় রাস্তার প্রকারভেদ ও পুরুত্ব নির্ভর করে । অনেক সময় রাস্তার সাবগ্রেডের পানি নিষ্কাশন ক্ষমতা ও প্রয়োজনীয় শক্তি বৃদ্ধি করার জন্য অনেক ধরনের ব্যবস্থা অবলম্বন করতে হয় । রাস্তার সাবগ্রেডের মাটি আর্দ্র স্যাঁতসেঁতে হলে এর ভার বহন ক্ষমতা কমে যায় ফলে রাস্তা নষ্ট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা দেখা দেয় ।

এর গভীরতা কয়েক সে . মি . হতে এক মিটার বা তারও অধিক হতে পারে । এর উপর বেস কোর্স ও ওয়ারিং কোর্সের পুরুত্ব নির্ভর করে । অতিরিক্ত কর্দমাক্ত  মাটিতে বড় বড় পাথর বোল্ডার বা ইটের টুকরার সমন্বয়ে সাবগ্রেড তৈরি করা উচিত নয় । মোটা দানাযুক্ত মাটির সাথে কিছু অংশ সূক্ষ্ম মাটির কণা মিশ্রিত করে সাবগ্রেড প্রস্তুত করা উচিত । সাথে সাথে পানি ছিটিয়ে রোলারের দ্বারা এবং দুরমুজের দ্বারা চাপিয়ে সাবগ্রেড তৈরি করা হয় । সাবগ্রেডে কোন প্রকারের দোষত্রুটি থাকলে রাস্তা নষ্ট না হওয়া পর্যন্ত অথবা নতুনভাবে সাবগ্রেড তৈরি না করা পর্যন্ত এটা মেরামত করা যায় না ।

 তাই প্রথমবারেই খুব সতর্কতার সাথে সাবগ্রেড প্রস্তুত করতে হবে । সাবগ্রেড পানি নিষ্কাশনের জন্য পুরাপুরি সক্ষম না হলে বালির স্তর ব্যবহার করে একে পানি নিষ্কাশনের জন্য উপযোগী করে তৈরি করতে হবে । সমতল ভূমির উপর মাটি ভরাট করে নতুন রাস্তা তৈরি করে একে কমপক্ষে ২/৩ বছরের জন্য ফেলে রাখতে হয় । মাটি ভালভাবে বসে দৃঢ় হলে রাস্তা তৈরির কাজ শুরু করা হয় । নিচু জলাভূমি বা সমতল ভূমি না হলে পাহাড়ি এলাকায় মাটি কেটে রাস্তার সাব গ্রেড তৈরি করতে হলে ২/৩ বছর অপেক্ষা করার প্রয়োজন হয় না ।

সাববেস প্রস্তুতকরণ : সাবমেড যেখানে নরম থাকে বা অনেক ব্যবস্থা গ্রহণের পরেও যখন সাবগ্রেডের শক্তি যথোপযুক্তভাবে পাওয়া যায় না তখন প্রকৌশলীগণ সাবগ্রেডের স্থায়িত্ব বাড়ানোর জন্য উপরিভাগে ৭ সে.মি. হতে ২৩ সে.মি. পর্যন্ত পুরুত্বে দানা জাতীয় পদার্থের একটি স্তর স্থাপন করতে হয় এবং পরে এটা রোলার দ্বারা ভারভাবে দৃঢ় করা হয় । এ স্তরের নামই সাববেস । সাবগ্রেড ভাল হলে সাববেসের প্রয়োজন নেই ।

এটা পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থাকে দ্রুততর করে এবং ভারবহনে সহায়তাকরে । সাধারণত মোটা দানার বালি , গ্রাভেল পাথর ইত্যাদি সাববেসে ব্যবহৃত হয় । সিবিআর ( CBR ) অর্থাৎ কালিফোর্নিয়া বিয়ারিং রেসিও পদ্ধতির সাহায্যে সাববেসের এবং উপরিস্থ স্তরগুলোর পুরুত্ব নির্ণয় করা যায় ।

জয়ন্ত চন্দ্র

ইন্সট্রাক্টর,

ড্যাফোডিল পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট

Tags: No tags

Add a Comment

You must be logged in to post a comment